রাতের আকাশে নতুন এক ধূমকেতু দেখা দিয়েছে। এবছর মার্চের ২৭ তারিখ নাসা-র Near-Earth Object Wide-field Infrared Survey Explorer (NEOWISE) উপগ্রহ মিশন প্রথম চিহ্নিত করতে পেরেছে এই কমেটটিকে। সেই নামেই নামকরণ। উত্তরপশ্চিম কোণ বা বায়ু কোনে দিগন্তের দিকে তাকালে সূর্যাস্তের ঠিক পরে দেখা যাচ্ছে এই ধূমকেতুটিকে। ধূমকেতুটির অবস্থান এখন সপ্তর্ষি মণ্ডলের নিচে প্রায়। দীর্ঘ ৬,৮০০ বছর পর আবার পৃথিবীর কাছে ছুটে আসছে এই ধূমকেতুটি। ২৩ জুলাই পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে থাকবে ধূমকেতুটি। সেদিন পৃথিবী থেকে দূরত্ব হবে প্রায় ১০ কোটি ৩০ লাখ কিলোমিটার।
ধূমকেতু হচ্ছে সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা এক ধরণের লেজ বিশিষ্ট বস্তু যা শূন্য থেকে হঠাৎ উদয় হয়ে আবার রহস্যজনকভাবে শূন্যেই মিলিয়ে যায়। সৌরজগতের অন্যান্য বস্তুর মত এরা পাথর দিয়ে তৈরি নয়, বরং এরা মহাকাশে মজুত ধুলিকণা, গ্যাস ও বরফ দিয়ে তৈরি। তবে বরফের সাথে কিছু পরিমাণে মিথেন, অ্যামোনিয়া, ও কার্বন ডাইঅক্সাইডও মিশ্রিত থাকে।
হিন্দু মতে পশ্চিমের ধূমকেতু ধ্বংসের খবর নিয়ে আসে। কোভিডের কল্যাণে এই বছর এমনিই কাঁপছে। আর নতুন কিছু হবে বলে মনে হয়না। বহু যুগ আগে বরাহমিহির এক ঝুঁটিওলা এক ধূমকেতু কথা লিখে গেছেন – চলাকেতু। সপ্তর্ষি মণ্ডলের তলা দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে মুখ করে ধেয়ে যাওয়া এই কেতুর বর্ননার সাথে নিওওয়াইস এঁর মিল অনেক।
এখনো সময় আছে নিওওয়াইস দেখার। রাতের আকাশে খোলা মাঠে গিয়ে বা উঁচু জায়গায় উঠে চোখ রাখুন। হুজুগে উঠে আমিও শুক্রবার রাতে হানা দিয়েছিলাম এক পাহাড়ের মাথায়। গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য। ধূমকেতু দেখার উত্তেজনায় সব সোশ্যাল ডিস্টান্সিং মাথায় উঠেছে। তারই ফাঁকে উত্তরপশ্চিম কোনে আইফোন তাক করে তুলে নিয়েছি ধূমকেতুর ছবি।