চা য়ে ও য়া লা

রাস্তা কিংবা রেস্তরাঁ, খাবার নিয়ে লিখবেন দামোদর শেঠ । এই তার প্রথম কিস্তি। চায়েওয়ালা-কে নিয়ে। 

 

টলিগঞ্জে দাঁড়িয়ে আছেন। মেট্রো ষ্টেশনের বাইরে। আর কেউ আসবে, দেখা হবে। সামান্য বসবেন, আড্ডা মারবেন, খাওয়াদাওয়া হবে। কিন্তু হাতে রেস্ত বলতে ৩০০ টাকা। বাড়ি ফেরার খুচরো-টুচরো আছে। এখন? উপায় বাতলাচ্ছি।

বন্ধুটির সঙ্গে দেখা করে হাঁটা দিন যেদিক থেকে গড়িয়া যাওয়ার অটো ছাড়ে। হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন, ওই ট্রামডিপোখানা পেরিয়েই। বা হাঁতে ফুলের দোকান, হুম। এবার হাঁটুন। হ্যাঁ একেবারে হাঁটাপথ। বাঁ দিকের দেওয়ালে নতুন বাংলা ও হিন্দি ছবির পোস্টার দেখতে দেখতে যান। তিনখানা মই অনেকসময় একটা তালা দিয়ে আটকানো থাকে ওই রাস্তার পাশেই। বাঁদিকের গলি নেবেন। দেখবেন ‘গ্রাহামস ল্যান্ড’ লেখা আছে হলুদ সাইনবোর্ড-এ। খান দুই-তিন বাড়ি পেরোলেই দেখতে পাবেন ‘চায়েওয়ালা’।

বাইরে বসার একটা ছোট জায়গা। কেমন লাগল ‘চায়েওয়ালা’ জানিয়ে যেতে পারেন আপনিও, যদিও বাইরের বোর্ডে ফুলস্টপ দেওয়ারও জায়গা নেই। ভেতরটা ঝাকাস করে সাজানো-গোছানো। খুব বেশি বড় না, কিন্তু ঘেঁষাঘেঁষি একেবারেই নয়। নানারকম চা অবশ্যই ট্রাই মারতে পারেন। দরজার ডানদিকে চারখানা সাদা-কালো চাওয়ালাদের ছবি কাপে চুমুক দিতে দিতে দেখে নিন। অবশ্য ওরিও শেকও খেতে পারেন। চমৎকার স্বাদু আর ঠাণ্ডা।

নিরামিষ আহারে গুরুর আপত্তি থাকলে জানবেন ‘চায়েওয়ালা’র আমেরিকান চিকেন উইংগস গুরুর আশীর্বাদ। অসামান্য সবাদ বলতে হবে। দুজনে মিলে দিব্যি হুশহাশ করে উড়িয়ে ফেলতে পারেন এই চারপিস চিকেন। সবথেকে বড় কথা হল সাইজেও বেশ গোদা এই চিকেনের আইটেমখানা। এতই গোদা যে চারপিস চিকেন চোখে দেখার পর রেট কার্ডে চোখ বুলিয়ে নিতে ইচ্ছে করবে, মাত্র ১৫০ টাকাই দাম!

তবে আর কি, এদিক সেদিক ফ্যালফ্যাল করে না ঘুরে একবার খেয়েই আসুন ‘চায়েওয়ালা’য়। রিভিউ জানাতে মোটেই ভুলবেন না। আরও হাজাররকম খাদ্য ছিল চায়েওয়ালার। সেসব নিয়ে নাহয় আরেকদিন আড্ডা মারা যাবে। খাবার হজম করে ফেলেছি, তাই আপনারা নজর দিলেও পেট খারাপের কোনও সুযোগ নেই। তাই ছবিও রইল এই লেখার সঙ্গে। থাকবেও।

ছবি: স্তুতি চক্রবর্তী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *